Popular Posts

Thursday, August 4, 2011

গীতা-প্রবেশিকা [ ভূমিকা-১]

নারায়ণং নমস্কৃত্য নরষ্ণৈব নরোত্তমম্।
দেবীং সরস্বতীং ব্যাসং ততো জয়মুদীরয়েৎ।।
মূকং করোতি বাচালং পঙ্গুং লঙ্ঘয়তে গিরিম্।
যৎকৃপা তমহং বন্দে পরমানন্দমাধবম্।।

গীতার মাহাত্ম্য ও প্রভাব - ন্যূনাধিক তিন সহস্র বৎসর হইল শ্রীগীতা বর্ত্তমান আকারে প্রচারিত হইয়াছেন, তদবধি ইনি সর্ব্বশাস্ত্রের শিরোভূষণ এবং সমভাবে সর্ব্ব সম্প্রাদায়ের নমস্যা হইয়া আছেন। পদ্মপুরাণ, বরাহপুরাণ, শিবপুরাণ প্রভৃতির অন্তর্গত গীতা-মাহাত্ম্য, গীতার অনুকরণে বহু নূতন নূতন 'গীতা' রচনা, আবার স্থলবিশেষে গীতারই সারাংশ অক্ষরশঃ পুরাণাদির মধ্যে সন্নিবেশ - এই সকল হইতে স্পষ্টই প্রতীয়মান হয়, যে পৌরাণিক যুগেও গীতা সর্ব্বমান্য ছিলেন। উপনিষৎ, গীতা ও বেদান্তদর্শন - তিন শাস্ত্রকে 'প্রস্থানত্রয়ী' বলা হয়। 'প্রস্থানত্রয়ীর' অর্থ কেহ বলেন যে, এই তিনটা সনাতন ধর্ম্মের প্রধান স্তম্ভস্বরূপ; কেহ বলেন, 'প্রস্থান' কথার মর্ম্ম এই যে, এই তিনটা ধ্রুবতারাকে লক্ষ্য করিয়া সংসার-সমুদ্রযাত্রী মোক্ষপথে প্রস্থান করেন। সে যাহা হউক, গীতা প্রাচীন প্রামাণ্য দ্বাদশ উপনিষদের পরবর্ত্তী হইলেও উহাদের সমশ্রেণীস্থ ত্রয়োদশ উপনিষৎ বলিয়া গণ্য এবং বেদের ন্যার সর্ব্বসম্প্রদায়েরই মান্য। এই হেতু পরবর্ত্তী কালে শ্রীমৎ শঙ্করাচার্য্য, ভামানুজাচার্য্য, শ্রীধর স্বামী, মধ্বাচার্য্য, বলদেব বিদ্যাভূষণ প্রভূতি যত শ্রেষ্ঠ ধর্ম্মোপদেষ্টা আবির্ভূত হইয়াছেন, সকলইগীতাজ্ঞান শিরোধার্য্য করিয়াছেন এবং স্বীয় স্বীয় সাম্প্রদায়িক মতের পরিপোষণার্থ গীতার টিকাভাষ্য রচনা করিয়াছেন। আধুনিক কালে ইংরেজী, জর্ম্মন প্রভৃতি ভাষায় গীতার অনুবাদ প্রচারিত হওয়ার পর পাশ্চাত্যদেশেও গীতার আদর উত্তরোত্তর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হইতেছে এবং অনেক চিন্তাশীল পাশ্চাত্য পণ্ডিত গীতা-জ্ঞানের ভিত্তিতেই ধর্ম্ম ও নীতি তত্ত্বের আলোচনা করিতেছেন। স্বনামখ্যাত আমেরিকান পণ্ডিত এমার্সনের গভীর তত্ত্ব-পূর্ণ সন্দর্ভসমূহে গীতার প্রভাব অতি সুস্পষ্ট। প্রসিদ্ধ জর্ম্মন পণ্ডিত ডয়সন্ গীতার নিষ্কাম কর্ম্মযোগের প্রতিপত্তিই সম্পূর্ণরূপে গ্রহণ করিয়াছেন এবং তাঁহার অধ্যাত্মতত্ত্ব সন্বন্ধীয় গ্রন্থে (Elements of Metaphysics) গীতার "তস্মাদসক্তঃ সততং কার্য্যং কর্ম্ম সমাচার"(৩।১৯) এই শ্লোকাংশ ঊদ্ধৃত করিয়া উহার সুসঙ্গত আধ্যাত্মিক বিচার করিয়াছেন।


সনাতন ধর্ম্মের বাহিরেও গীতার প্রভাব কম নহে। বৌদ্ধধর্ম্মের মহাযান পন্থার আবির্ভাব হইলে যে পরহিতব্রত নিস্কামকর্ম্মী সন্ন্যাসী-সঙ্ঘের সৃষ্টি হইয়াছিল তাঁহাদেরই প্রযত্নে বৌদ্ধধর্ম্ম তিব্বত, চীন, জাপান, তুর্কীস্তান ও পূর্ব্ব ইউরোপ পর্য্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করিয়াছিল। নিবৃত্তিমূলক নিরীশ্বর বৌদ্ধধর্ম্ম হইতে এই প্রবৃত্তিমূলক ভক্তিপর মহাযানপন্থার উদ্ভব গীতার প্রভাবেই হইয়াছিল, ইহা বৌদ্ধধর্ম্মের ঐতিহাসিকগণ বলিয়া থাকেন; এমন কি, এই মহাযানপন্থার উৎপত্তি সন্বন্ধে স্বয়ং বৌদ্ধ গ্রন্থকারগণই শ্রীকৃষ্ণের নাম পর্য্যন্ত স্পষ্ট নির্দ্দেশ করিয়াছে - (লোকমান্য তিলক - গীতারহস্য;
Dr. Kern's Manual of Indian Buddhism)

বস্তুতঃ, জ্ঞানমূলক বৌদ্ধধর্মের সন্ন্যাসবাদের সহিত গীতোক্ত ভক্তিবাদ ও নিস্কাম কর্ম্মের সংযোগ করিয়া উক্ত ধর্ম্মের যে সংস্কার সাধিত হয় তাহাই মহাযানপন্থা নামে পরিচিত।
  এই মহাযানপন্থার বৌদ্ধ যতিগণের প্রাচীনকালে খ্রীষ্টের জন্ম ও কর্ম্ম স্থান ইহুদীদেশেও যাতায়াত ছিল, ইহা আধুনিক ঐতিহাসিক আলোচনায় সপ্রমাণ হইয়াছে। বৌদ্ধধর্মের সন্ন্যাসবাদ ও গীতার ভক্তিবাদ ঐ দুইটীই খ্রীষ্টীয় ধর্ম্মের মূ্লতত্ত্ব এবং মহাযান বৌদ্ধশাস্ত্রের এবং গীতার অনেক কথা বাইবেল গ্রন্থেও পাওয়া যায়। অনেকস্থলে গীতা ও বাইবেলের উপদেশ প্রায় শব্দশঃ একরূপ। যেমন, -

বাইবেল  -  'সেই দিন তোমরা জানিতে পারিবে,আমি আমার পিতার মধ্যে এবং আমি তোমাদের মধ্যে আছি।'
গীতা     -  'যো মাং পশ্যতি সর্ব্বত্র' ইত্যাদি ৬।৩০; 'যেন ভূতান্যশেষাণি দ্রক্ষস্যাত্মন্যথো-ময়ি' ৪।৩৫; 'ময়ি তে তেষু চাপ্যহং' - ৯।২৯।
বাইবেল  -  তোমরা যাহা আহার কর, যাহা পান কর বা যাহা কিছু কর, ঈশ্বরের জন্য করিবে - পলের উক্তি (1. Corin 10,31)
গীতা     -  'যৎ করোষি যদশ্নাসি' ইত্যাদি ৯।২৭;
বাইবেল  -  'যে আমার ধর্ম্ম পালন করে ও আমাকে প্রীতি করে, আমিও তাহাকে প্রীতি করি' (জন, ১৫।২১)।
গীতা     -  "প্রিয়োহি জ্ঞানিনোহত্যর্থমহং স চ মম প্রিয়ঃ" (৭।১৭) অথবা (১২।২০)।

জর্ম্মন ভাষায় গীতা অনুবাদক ডাঃ লবিনসর গীতা ও বাইবেলের মধ্যে শতাধিক স্থলে এইরূপ শব্দসাদৃশ্য দেখাইয়াছেন এবং বাইবেল হইতেই তিনি সকল কথা গ্রহণ করিয়াছেন। কিন্তু এক্ষণে ইহা অবিসংবাদিতরূপে প্রমাণীকৃত হইয়াছে যে, গীতারচনা কালে যীশুখৃষ্টের আবির্ভাবই হয় নাই। অবশ্য উভয়ের একই তত্ত্ব প্রায় একই ভাষায় স্বতন্ত্রভাবেও উপদেশ দেওয়া কিছু বিচিত্র নহে। কিন্তু একের নিকট হইতে অপরে গ্রহণ করিয়াছেন, ইহাই যদি সাদৃশ্যের কারণ অনুমিত হয়, তাহা হইলে শ্রীকৃষ্ণের নিকট হইতেই যীশুখ্রীষ্ট গ্রহণ করিয়াছে, একথা না বলিয়া উপায় নাই; এবং অনেক পাশ্চ্যত্য পুরাবৃত্তজ্ঞ পণ্ডিতও সেইরূপ সিদ্ধান্তই স্থির করিয়াছেন। সে সকল ঐতিহাসিক তত্ত্বের বিস্তারিত আলোচনা এখানে নিষ্প্রয়োজন।
(Robertson's Christianity and Mythology, Lillie's Buddha and Buddhism ইত্যাদি গ্রন্থ দ্রষ্টব্য)।

গীতা সর্ব্বশাস্ত্রময়ী, অপূর্ব্ব রহস্যময়ী - গীতা বুঝিবার পক্ষে বিদেশীয় বিবিধ ধর্ম্মতত্ত্বের আলোচনায় আমাদের তত প্রয়োজন নাই, কেননা গীতা স্বয়ম্ভু, সর্ব্বতঃপূর্ণ, স্বতঃপুর্ণ, গীতা দানই করিয়াছেন, কাহারো নিকট হইতে কিছু গ্রহণ করেন নাই। কিন্তু প্রাচীন ভারতীয় বিভিন্ন ধর্ম্মমত ও দার্শনিক তত্ত্বের সহিত অন্ততঃ সাধারণভাবে পরিচিত না হইলে গীতাতত্ত্ব সম্যক্ উপলব্ধি করা অসম্ভব। হিন্দু-ধর্ম বেদ-মূলক; বেদ সনাতন, নিত্য; এই হেতু এই ধর্ম্মের প্রকৃত নাম বৈদিক ধর্ম্ম বা সনাতন ধর্ম্ম; 'হিন্দু' নাম বিদেশীয়; বেদার্থ, বিভিন্ন ঋষিগণ বিভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করিয়াছেন এবং এই হেতুই বৈদিক ধর্ম্মে সাধ্যসাধনা বিষয়ে নানা মত এবং নানা শাস্ত্রের সৃষ্টি হইয়াছে। গীতা-প্রচারকালে সাংখ্য-বেদান্তাদি দার্শনিক মত এবং কর্ম্ম, যোগ, জ্ঞান ও প্রতীকোপাসনা প্রভৃতি বিভিন্ন আপাতবিরোধী সাধনমার্গ প্রচলিত ছিল। গীতায় এ সকলেরই সমাবেশ হইয়াছে এবং এই কারণেই বাহ্য-দৃষ্টিতে গীতার অনেক কথাই পূর্ব্বাপর অসঙ্গত ও পরস্পর বিরোধী বলিয়া প্রতীয়মান হয়। গীতায় শ্রীভগবান্ কোথাও বৈদিক যাগযজ্ঞাদি ও বেদবাদের তীব্র প্রতিবাদ করিতেছেন (২।৪২ - ৪৪, ৫৩), আবার কোথাও বলিতেছেন, যজ্ঞাবশিষ্ট 'অমৃত' ভোজনকারী সনাতন ব্রহ্মলাভ করেন (৪।৩০)। কোথাও বেদকে ত্রৈগুণ্য-বিষয়ক বলিয়া ব্রহ্মজ্ঞ ব্যক্তির পক্ষে নিস্প্রয়োজনীয় বলিতেছেন, (২।৪৫।৪৬।৫২।৫৩), আবার কোথায়ও 'আমিই সকল বেদে বেদ্য' 'আমিই বেদ-বেত্তা ও বেদান্তকৃৎ' ইত্যাদি বাক্যে বেদের মাহাত্ম্য কীর্ত্তন করিতেছেন (১৫।১৫)। কোথায়ও বলিতেছেন, আমি সর্বভূতেই সমান, "আমার প্রিয়ও নাই, দ্বেষ্যও নাই" (৯।২৯); কোথায়ও আবার বলিতেছেন, "আমার ভক্তই আমার প্রিয়, আমার জ্ঞানী ভক্ত, আমার ধর্ম্ম-অনুষ্ঠানকারী ভক্ত, আমার অতীব প্রিয়" (৭।১৭, ১২।১৩-২০)। কোথায়ও বলিতেছে, "জ্ঞানের সদৃশ পবিত্র আর কিছুই নাই, জ্ঞানেই সমস্ত কর্মের পরিসমাপ্তি, জ্ঞানেই মুক্তি, জ্ঞানেই শান্তি" (৪।৩৬-৩৯); কোথাও বলিতেছেন, "সেই পরম পুরুষ একমাত্র। ভক্তিদ্বারাই লভ্য, আর কিছুতে নহে" (৮।১৪।২২, ৯।৩৪, ১৮।৫৫ ইত্যাদি)। আবার কোথাও শান্ত সমাহিত, ধ্যানযোগীর নির্ব্বাতনিস্কম্প প্রদীপবৎ অচঞ্চল চিত্তের বর্ণনা করিয়া শান্ত-রসাস্পদ পরমসুখকর ব্রহ্মনির্ব্বাণ লাভার্থ অধ্যবসায় সহকারে যোগাভ্যাসের উপদেশ দিতেছেন (৬।১৯-২৭), আবার সঙ্গে সঙ্গেই বলিতেছেন, "স্বকর্ম্ম দ্বারাই সিদ্ধিলাভ হয়, উঠ, যুদ্ধ কর" (৩।৩০, ৪।৪২, ১৮।৪৬।৫৬-৫৭ ইত্যাদি)। একি রহস্য। বস্তুতঃ গীতা অপূর্ব্ব রঙ্গময়ী। ইহার রহস্যভেদ করিতে মহামতি অর্জ্জুনকেও বিব্রত হইতে হইয়াছিল এবং তিনিও ভগবানকে বলিয়াছিলেন - তুমি যেন বড় 'ব্যামিশ্র' বাক্য বলিতেছ (৩।২, ৫।১)। এইরূপ দুরধিগম্যা বলিয়াই গীতা সন্বন্ধে এই সকল কথা বলা হয় - 'কৃষ্ণো জানাতি বৈ সম্যক্ কিঞ্চিৎ কুন্তীসুতঃ ফলম্' অথবা 'ব্যাসো বেত্তি ন বেত্তি বা', ইত্যাদি - গীতাতত্ত্ব শ্রীকৃষ্ণই সম্যক্ জানেন, অর্জ্জুন কিঞ্চিৎ ফল অবগত আছেন, ব্যাসদেবও জানেন কি না জানেন বলা যায় না, ইত্যাদি।

কথা এই, নানাত্বের মধ্যে থাকিয়া একত্ব দর্শন করা যায় না। কেবল শাস্ত্রজ্ঞানী, অযুক্ত, বদ্ধ জীবের পরমেশ্বর-স্বরূপ ও জ্ঞানকর্ম্মাদি সাধন-তত্ত্ব বিষয়ক যে জ্ঞান ও ধারণা তাহা অন্ধের হস্তিদর্শনের ন্যায়, একদেশদর্শী। চারি অন্ধ হাতীর গায়ে হাত বুলাইয়া ঠিক করিলেন, হাতীটা কেমন বস্তু। কেহ বলিলেন, হাতী একটা প্রাচীরের ন্যায়, কেহ বলিলেন, হাতীটা থামের ন্যায়, কেহ আবার বলিলেন, হাতী কুলার ন্যায়, কেহ বলিলেন, রম্ভা তরুর ন্যায় - কাজেই ভেদবাদ ও বিবাদ। কিন্তু যে চক্ষুস্মান্ সেই মাত্র হাতীর সমগ্র স্বরূপ দেখিতে পারে ও বুঝিতে পারে যে ওগুলি একই বস্তুর বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মাত্র। গীতায়ও শ্রীভগবান্ সনাতন ধর্ম্মের বিভিন্ন অঙ্গগুলির একত্র সমাবেশ করিয়া উহার সমগ্র স্বরূপটীই দেখাইতেছেন। উহা জানিলে আর জানিবার কিছুই অবশিষ্ট থাকে না (৭।১-২)। আমাদের সংস্কারান্ধ দৃষ্টি অঙ্গবিশেষেই আবদ্ধ থাকে, জ্ঞানচক্ষু ব্যতীত সমগ্রতত্ত্ব হৃদ্গত হয়। জ্ঞানলাভ তাঁহারই কৃপা-সাপেক্ষ। সুতরাং তাঁহার কৃপার উপর নির্ভর করিয়া যাহার যতটুকু সামর্থ্য তাহা লইয়াই উহা যৎকিঞ্চিৎ বুঝিবার চেষ্টা করিতে হইবে।

তবে উহাতে প্রবেশ করিতে হইলেও সনাতন ধর্ম্মের বাহ্য স্বরূপটীর অল্পবিস্তর জ্ঞান থাকা আবশ্যক। গীতা-প্রচারকালে বৈদিক কর্ম্মবাদ, সাংখ্যের প্রকৃতিবাদ, উপনিষদের ব্রহ্মবাদ, যোগানুশাসন, প্রতীকোপাসনা ও অবতারবাদ প্রভৃতি বৈদিক ধর্ম্মের প্রধান অঙ্গগুলি সকলই পূর্ণতা প্রাপ্ত হইয়াছিল। গীতা এ সকলই গ্রহণ করিয়াছেন এবং সকলের বিরোধ ভঞ্জনপূর্ব্বক অপূর্ব্ব সমন্বয় করিয়া নিজের একটা বিশিষ্ট মতও প্রচার করিয়াছেন। এ সকল বিভিন্ন মতবাদের প্রকৃত তত্ত্ব কি, কি ভাবে গীতা ইহাদের উপপত্তি গ্রহণ করিয়াছেন, তাহা না বুঝিলে গীতা-তত্ত্ব প্রকৃতপক্ষে কিছুই হৃদয়ঙ্গম হয় না। তাহা বুঝিতে হইলেই বৈদিক ধর্ম্মের ক্রমবিকাশের ঐতিহাসিক পরম্পরা এবং গীতাকালে প্রচলিত ঐসকল বিভিন্ন মতবাদের অন্ততঃ সাধারণ জ্ঞান থাকা একান্ত আবশ্যক। এই হেতু আমরা প্রথমে সনাতন ধর্মের ক্রমবিকাশতত্ত্ব ও প্রধান অঙ্গগুলির সাধারণ পরিচয় দেওয়া আবশ্যক বোধ করিতেছি।

চলমান ... গীতা-প্রবেশিকা [ ভূমিকা - ২

3 comments:

  1. Finally found the hard copy source of this blog :-
    "Srimadbhagabadgeeta" by Late Jagadish Chandra Ghosh. 26th Edition - June 1997 (1st Edition, 1925 from Dhaka now in Bangladesh). Published by Subhadra Dey (Ghosh), Presidency Library, 15 Bankim Chatterjee Street, Kolkata-700073. Printed by Web Impressions Pvt.Ltd., 34/2 Beadon Street, Kolkata-700006.

    ReplyDelete
  2. বাংলা হরফে সংস্কৃত লেখা হলে মাত্র দুটো অক্ষর নিয়েই ঝামেলা হয়, তা হল অন্তস্থ 'ব' ও বর্গীয় 'ব'। ব-ফলাগুলো সব অন্তস্থ 'ব'। বাকিগুলো গুলিয়ে গেলে বাংলায় অসুবিধা নেই, কিন্তু সংস্কৃতে মহা ঝামেলা। সংস্কৃতর 'ब'-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বর্গীয় 'ব'-গুলোকে যদি পেট কাটা 'ৰ' লেখা যায়, তাহলে অর্থ ও ছন্দ বজায় রেখে শ্লোকগুলো শুদ্ধভাবে পড়া যায়। Unicode-এ লিখতে গেলেও এই পেট কাটা 'ৰ' নিয়ে কোন অসুবিধা নেই, কারণ এটা অসমীয়া ভাষায় 'র' হিসাবে ব্যবহার হয়। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, অসমীয়া ভাষায় অন্তস্থ 'ব' ও বর্গীয় 'ব' দুটিই চালু আছে, যথাক্রমে 'ৱ' ও 'ব'।

    বাঙালির গীতা পাঠের সুবিধার্থে আপনার লেখার প্রচেষ্টা অতি প্রশংসনীয় ও অনন্য, তাই বর্গীয় 'ব'-গুলোকে পেট কাটা 'ৰ' লেখার ব্যাপারটা ভেবে দেখতে অনুরোধ করি

    ReplyDelete
    Replies
    1. আপনি কিছু সংস্কৃত শ্লোক পড়তে পড়তে পার্থক্য নিশ্চয় বুঝতে পারবেন ব এর পার্থক্য। রোমান হরফে শ্লোক উচ্চারণ দেখলে v বা w এবং b এর তফাৎ দৃষ্ট হয়।

      Delete